পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী জনগাষ্ঠীর ১ম ম্যাজিষ্ট্রেট প্রয়াত জ্যোতিন্দ্র প্রসাদ তঞ্চঙ্গ্যার কর্মজীবন।

লেখক: বিশু তনচংগ্যা

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের আদিবাসী জনগাষ্ঠীর প্রথম বি.কম. এল.এল.বি পাশ করা ম্যাজিষ্ট্রেট জ্যোতিন্দ্র প্রসাদ তঞ্চঙ্গ্যা । কবি কার্তিক চন্দ্র ে বড় ছেলে জ্যোতিন্দ্র প্রসাদ তঞ্চঙ্গ্যা ১৯৪০ সালে ১২২ নং কুতুবদিয়া মৌজা রাঙামাটি সদর মহকুমায় জন্ম গ্রহণ করেন। 

তারা দুই মায়ের ৭ বোন এবং ৫ ভাই মোট ১২ ভাইবোন ছিলেন। 

রাঙামাটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে মেট্রিকুলেশন পাশ করার পর চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর কানুনগো পাড়া কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.কম. এল.এল.বি ডিগ্রি লাভকারী তৎকালীন পার্বত্য অঞ্চলের প্রথম ব্যাক্তি তিনি। তারপরে বি.কম. এল.এল.বি ডিগ্রি অর্জন করেন প্রয়াত সংসদ সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা মঞ্জু। জ্যোতিন্দ্র প্রসাদ তঞ্চঙ্গ্যা ১৯৬৯ সালে ইষ্ট পাকিস্তান সার্ভিস কমিশনের (ইপিসিএস- বর্তমানে বিসিএস) অধীনে চট্টগ্রামের ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে ঢাকা, চট্টগ্রাম সুনামগঞ্জ,পাবনা ও সিরাজগঞ্জে

 ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত দিনাজপুর সদরে সাব ডিভিশনাল কর্মকর্তা, ৪ জানুয়ারি ১৯৮২ থেকে ২১ অক্টোবর ১৯৮২ রাজশাহীতে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ১ নভেম্বর ১৯৮২ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত সারিয়াকান্দি বগুড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে, ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক, ১৯৮৯-৯০ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে মন্ত্রীর একান্ত সচিব, ১৯৯১ সালে মৌলভিবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি), ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ভুমি মন্ত্রণালয়ের ভুমি জরিপ অধিদপ্তরের উপ মহা পরিচালক, ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার এবং সর্বশেষ ১২ মে ১৯৯৯ সাল থেকে দুই বছর চুক্তি ভিত্তিক পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলিক পরিষদের সর্বপ্রথম মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিষ্ঠার সাথে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন এক ছেলে ও‌ দুই মেয়ে সন্তানের পিতা। তার একমাত্র ছেলে প্রকৌশলী অনুপম তঞ্চঙ্গ্যা বর্তমানে অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী। অনুপমের বড়বোন জ্যোৎস্না তঞ্চঙ্গ্যা স্বপরিবারে দুবাই ও ছোট বোন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার জয়া তঞ্চঙ্গ্যা অষ্ট্রেলিয়াতে বসবাস করেন। স্ত্রী নিরুপমা তঞ্চঙ্গ্যা ২০১৬ সালে পরলোক গমন করেন।

এবং জ্যোটিন্দ্র প্রসাদ তঞ্চঙ্গ্যা গত ৮ জানুয়ারী ২০১৯ সোমবার বিকাল ৩ টায় রাঙামাটি শহরের পূর্ব ট্রাইবেল আদামের নিজ বাস ভবনে বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি পরলোক গমন করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। প্রয়াত জ্যোটিন্দ্র প্রসাদ তঞ্চঙ্গ্যা তিনি এক ছেলে দুই মেয়ে সহ আদিবাসীদের মধ্যে ১ম বাংলাদেশ সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে অসংখ্য গুণগ্রাহী ও আত্মীয় স্বজনকে রেখে যান।

Leave a comment